বন্ধুর বউ বর্ষার গুদে স্বামীর বন্ধুর চোদন: এক নতুন বাংলা চটি গল্প অধ্যায় ১

0
(0)

দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের সেই অভিজাত ভিলাটি যেন নিস্তব্ধতার চাদরে মোড়া। বাইরে তখন বর্ষার শেষ অধ্যায় চলছে। আকাশটা ঘন কালো মেঘে ঢাকা, যেন এক্ষুনি ঝমঝম করে সবটুকু অভিমান ঝরিয়ে দেবে। কাঁচের বিশাল দেয়ালের ওপার থেকে শহরের অনুচ্চ গুঞ্জন আর ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ ভেসে আসছিল। ঘরের ভেতরে অবশ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের কৃত্রিম শীতলতা। দামি লেদারের সোফায় গা এলিয়ে বসেছিল তিনজন—ইন্দ্রনীল সেন, তার স্ত্রী বর্ষা, আর তাদের দুজনেরই প্রিয় বন্ধু আকাশ রায়।

ইন্দ্রনীলের হাতে ছিল গ্লেনফিডিচের আঠারো বছরের পুরোনো সিঙ্গল মল্ট স্কচের গ্লাস। বরফের টুকরোগুলো মৃদু টুংটাং শব্দ করছিল। তার পরনে আরমানির সাদা শার্ট, যার উপরের দুটো বোতাম খোলা। ৩৭ বছরের ইন্দ্রনীল সেন কলকাতার কর্পোরেট জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার কথায়, চাউনিতে, হাসিতে—সর্বত্র ক্ষমতার দম্ভ আর আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ছিল।

“আরেকটা মাল্টি-ক্রোর ডিল সাইন করে এলাম আজ,” ইন্দ্রনীল বরফের গ্লাসে আলতো চুমুক দিয়ে বলল। তার ঠোঁটের কোণে এক বিজয়ীর হাসি। “এই প্রোজেক্টটা পেলে আমাদের কোম্পানি আগামী দশ বছরের জন্য মার্কেটে একচ্ছত্র আধিপত্য করবে।”

তার ঠিক পাশেই বসেছিল বর্ষা। বত্রিশ বছরের বর্ষা যেন এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। তার পরনে ছিল অফ-হোয়াইট ঢাকাই জামদানি, সঙ্গে কানে ছোট্ট একজোড়া মুক্তোর দুল। খোলা চুল পিঠের উপর ছড়িয়ে পড়েছে। তার হাতেও হুইস্কির গ্লাস, কিন্তু সে পান করছিল না, শুধু আঙুল দিয়ে গ্লাসের গা স্পর্শ করছিল। ইন্দ্রনীলের কথায় সে সামান্য হাসল, কিন্তু সেই হাসি তার চোখ পর্যন্ত পৌঁছাল না। তার দৃষ্টি কাঁচের দেয়ালের বাইরে, মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে নিবদ্ধ। সে যেন এই বিলাসবহুল খাঁচার পাখি, যার মনটা বাইরের ঝড়ো হাওয়ায় উড়তে চায়।

আর একটু দূরে, সিঙ্গেল সোফাটায় বসেছিল আকাশ। পেশায় আর্কিটেক্ট, ইন্দ্রনীলের ছোটবেলার বন্ধু। তার চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, পরনে সাধারণ একটা টি-শার্ট আর জিন্স। সে চুপচাপ শুনছিল, কিন্তু তার চোখ বারবার বর্ষার দিকে চলে যাচ্ছিল। সে দেখছিল কীভাবে আলো-আঁধারিতে বর্ষার মসৃণ ত্বকের উপর ছায়া নামছে, কীভাবে তার শাড়ির আঁচলটা কাঁধ থেকে সামান্য সরে গিয়ে উন্মুক্ত কাঁধ আর গলার ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। আকাশের বুকের ভেতরটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল। এই নারীকে সে ভালোবাসে, বহু বছর ধরে, নীরবে, নিজের মনের গভীরে।

ঘরের কোণে দামি সাউন্ড সিস্টেমে খুব হালকা ভলিউমে বাজছিল দেবব্রত বিশ্বাসের গলায় রবীন্দ্রসংগীত—‘আমার পরান যাহা চায়’। গানটা যেন আকাশের মনের কথাই বলছিল।

হঠাৎই একটা তীক্ষ্ণ শব্দে ঘরের নিস্তব্ধতা ভাঙল। ইন্দ্রনীলের আইফোনটা ভাইব্রেট করে উঠল। স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটা হোয়াটসঅ্যাপ নোটিফিকেশন। ইন্দ্রনীল ফোনটা হাতে তুলে নিল এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই স্ক্রিনটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল, যেন কিছু আড়াল করতে চাইছে। কিন্তু বর্ষার সজাগ চোখ এড়াল না। সে দেখল, ইন্দ্রনীলের মুখের পেশিগুলো মুহূর্তের জন্য কঠিন হয়ে উঠল এবং পরক্ষণেই সে একটা কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে তুলল।

“অফিসের মেসেজ,” ফোনটা পকেটে ঢোকাতে ঢোকাতে বলল ইন্দ্রনীল। “এই ক্লায়েন্টগুলো দিনরাত চেনে না।”

বর্ষা কিছু বলল না। সে শুধু তার গ্লাসটা তুলে নিয়ে এক চুমুকে অনেকটা হুইস্কি গলায় ঢেলে দিল। তার গলাটা জ্বলে গেল, কিন্তু তার মনের ভেতরের জ্বালার কাছে তা কিছুই নয়। সে জানে, এটা অফিসের মেসেজ নয়। সে ইন্দ্রনীলের এই খেলাটা চেনে। তার শান্ত, সুন্দর মুখে একটা শীতল ছায়া নেমে এল। এই নিখুঁত সন্ধ্যায় প্রথম ফাটলের চিহ্ন দেখা দিল।

ইন্দ্রনীল উঠে দাঁড়াল, গ্লাসের বাকি হুইস্কিটা এক চুমুকে শেষ করে। “এক্সকিউজ মি, একটা কনফারেন্স কল। এই আমেরিকানগুলো সময়ের দাম বোঝে না,” একটা বিরক্তির ভঙ্গি করে সে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে গেল। কাঁচের দরজাটা সামান্য ভেজিয়ে দিয়ে সে ফোনে কথা বলতে শুরু করল। তার কর্তৃত্বপূর্ণ গলার স্বর বৃষ্টির শব্দের সাথে মিশে একটা অস্পষ্ট গুঞ্জন তৈরি করছিল।

লিভিং রুমে নেমে এল এক অস্বস্তিকর নীরবতা। বর্ষা গ্লাসের কানায় আঙুল বোলাচ্ছিল, আর আকাশ স্থির চোখে তাকে দেখছিল। ইন্দ্রনীলের অনুপস্থিতিটা যেন ঘরের বাতাসকে আরও ভারী করে তুলেছে।

নীরবতা ভাঙল আকাশ। তার গলাটা ছিল শান্ত, গভীর। “তোমার ‘ছায়াপথ’ এক্সিবিশনটা নিয়ে ভাবছিলাম। খবরের কাগজে রিভিউগুলো পড়লাম। অসাধারণ কাজ করেছো, বর্ষা।”

বর্ষা সামান্য চমকে আকাশের দিকে তাকাল। ইন্দ্রনীল তার কাজের প্রশংসা করে, কিন্তু সেটা অনেকটা সামাজিক দায়িত্ব পালনের মতো। আকাশের কথায় যে আন্তরিকতা ছিল, তা বর্ষার মন ছুঁয়ে গেল। সে মৃদু হেসে বলল, “ধন্যবাদ। তুমি তো এলে না।”

“যেতে পারিনি, কিন্তু মনটা ওখানেই ছিল,” আকাশ坦白 করল। “তোমার সিলেকশনগুলো আমি দেখেছি অনলাইনে। প্রত্যেকটা ছবির মধ্যে যে একটা গল্প লুকিয়ে আছে, সেটাকে তুমি যেভাবে বের করে এনেছো… অসাধারণ।”

কথার সুতো ধরে বর্ষা যেন একটু প্রাণ ফিরে পেল। সে উঠে গিয়ে ঘরের কোণের বুকশেলফ থেকে একটা ভারি, বাঁধানো কফি-টেবিল বুক নিয়ে এল। “এই দেখো, এটা ওই এক্সিবিশনের ক্যাটালগ।”

তারা দুজনে সোফার এক প্রান্তে এসে বসল। বইটা তাদের দুজনের কোলের উপর রাখা। বৃষ্টির ছাঁট এসে কাঁচের দেয়ালে লাগছে, একটা মায়াবী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বর্ষা পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে প্রত্যেকটা ছবির পেছনের গল্প বলতে লাগল। তার চোখেমুখে ফুটে উঠল এক অদ্ভুত দীপ্তি। এই সেই বর্ষা, যাকে আকাশ ভালোবাসে—শিল্পের প্রতি যার অদম্য আবেগ। ইন্দ্রনীলের টাকার অহঙ্কারের ছায়ায় এই বর্ষাটা প্রায়ই হারিয়ে যায়।

একটা ছবির দিকে আঙুল দেখিয়ে বর্ষা যখন কিছু বোঝাতে গেল, ঠিক সেই মুহূর্তে আকাশও একই ছবির একটি ডিটেলের দিকে নির্দেশ করতে চাইল। তাদের দুজনের হাত, আঙুলগুলো একে অপরের উপর এসে পড়ল।

একটা মুহূর্ত। হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের মতো একটা শিহরণ খেলে গেল দুজনের শরীরে। বর্ষার ঠান্ডা আঙুলের উপর আকাশের উষ্ণ হাতের স্পর্শ। বর্ষা চমকে হাতটা সরিয়ে নিতে চাইল, কিন্তু পারল না। আকাশের আঙুলগুলোও স্থির হয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য সময় যেন থেমে গেছে। বাইরের বৃষ্টির শব্দ, ইন্দ্রনীলের অস্পষ্ট কথার আওয়াজ—সবকিছু তাদের চেতনা থেকে মুছে গেল। শুধু রইল দুটো মানুষের শরীরের সামান্য স্পর্শ আর তার থেকে জন্ম নেওয়া তীব্র, নিষিদ্ধ অনুভূতি। বর্ষার গাল গরম হয়ে উঠল। সে অনুভব করতে পারছিল তার বুকের ভেতর হৃদপিণ্ডটা পাগলের মতো লাফাচ্ছে।

আকাশ খুব ধীরে নিজের হাতটা সরিয়ে নিল। কিন্তু তার স্পর্শের রেশ বর্ষার চামড়ায় লেগে রইল।

বর্ষা মুখ তুলে আকাশের দিকে তাকাল। আকাশও তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। সেই দৃষ্টিতে কোনো वासना ছিল না, ছিল গভীর মায়া, শ্রদ্ধা আর না-বলা হাজারো কথার ভিড়। আকাশ দেখছিল বর্ষার চোখের গভীরে জমে থাকা একাকীত্বের মহাসাগর। আর বর্ষা দেখছিল আকাশের চোখে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার আশ্বাস। সেই দৃষ্টি বিনিময় কয়েক সেকেন্ডের হলেও, তার গভীরতা ছিল অতল। তাদের দুজনের মনের মধ্যে যে ঝড় চলছিল, তা বাইরের বর্ষার ঝড়ের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না।

বর্ষা আর চোখাচোখি করতে পারল না। সে লজ্জা পেয়ে চোখ নামিয়ে নিল। ভেতরের উত্তেজনা ঢাকতে সে বইয়ের পাতা ওল্টাতে গিয়ে প্রায় ছিঁড়েই ফেলছিল।

“চা খাবে?” পরিস্থিতি হালকা করার জন্য বর্ষা প্রায় ফিসফিস করে বলল। তার গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল।

আকাশ শুধু মাথা নাড়ল। তারও কথা বলার শক্তি ছিল না। এই কয়েক মুহূর্তের নৈকট্য তার বছরের পর বছর ধরে জমানো আবেগকে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। সে জানে, এই অনুভূতির কোনো ভবিষ্যৎ নেই, কিন্তু এই মুহূর্তটাকেই সে সারাজীবন আঁকড়ে ধরে বাঁচতে পারবে।

ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যালকনির কাঁচের দরজাটা সশব্দে সরে গেল। ইন্দ্রনীল ঘরে ঢুকল, তার মুখে বিজয়ীর হাসি। “ডান! আমেরিকানগুলোকে বুঝিয়ে দিলাম বস কে,” সে সোজা বার-কাউন্টারের দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজের গ্লাসে আরও খানিকটা স্কচ ঢালল।

তার আগমনে বর্ষা আর আকাশের মধ্যে তৈরি হওয়া সেই ভঙ্গুর, মায়াবী মুহূর্তটা কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। বর্ষা তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে বসল, আর আকাশ দৃষ্টি সরিয়ে নিল। ঘরের উষ্ণ, অন্তরঙ্গ আবহাওয়াটা নিমেষে উধাও হয়ে গেল ইন্দ্রনীলের কর্কশ উপস্থিতিতে।

ইন্দ্রনীল সোফায় ধপাস করে বসে তাদের দুজনের মাঝখানে রাখা আর্টবুকটার দিকে তাকিয়ে ব্যঙ্গের সুরে বলল, “ওহ, তোমরা এখনও এই বোরিং জিনিসটা নিয়ে পড়ে আছো? আর্ট! সিরিয়াসলি? জীবনের আসল আর্ট তো অন্য জায়গায়, তাই না আকাশ?” সে আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ মারল।

আকাশ কোনো উত্তর দিল না, শুধু গ্লাসে একটা লম্বা চুমুক দিল।

ইন্দ্রনীল থামার পাত্র নয়। নেশাটা তার মাথায় চড়ছিল, আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল তার অহংকার। “আর্টের কথা বলতেই মনে পড়ল,” সে শুরু করল, “গত শুক্রবারের পার্টির কথা মনে আছে, আকাশ? পার্ক স্ট্রিটের ওই নতুন ক্লাবটায়… কী সব ‘পিস’ এসেছিল! একটা নতুন মডেল, নাম যেন কী… রিয়া না টিয়া… আমার নতুন ক্যাম্পেইনের জন্য এসেছিল। পুরো পার্টিতে আমার গা ঘেঁষে ঘুরঘুর করছিল। মেয়েটার শরীরটা, মাইরি বলছি, যেন কোনো ভাস্কর নিজের হাতে নিখুঁতভাবে তৈরি করেছে। ওরকম মাল দেখলে নিজেকে কন্ট্রোল করা মুশকিল, বুঝলি?”

ইন্দ্রনীল রসিয়ে রসিয়ে বলছিল, আর বর্ষার মুখটা পাথরের মতো শক্ত হয়ে যাচ্ছিল। তার কিছুক্ষণ আগের সেই উষ্ণতা, সেই শিহরণ—সবকিছু যেন এক মুহূর্তে বরফ হয়ে জমে গেল। ইন্দ্রনীলের প্রত্যেকটা শব্দ তার কানে বিষাক্ত তীরের মতো বিঁধছিল। এই সেই লোক, যার সাথে সে সাত বছর ধরে এক ছাদের তলায় বাস করছে। যার অবহেলা আর নোংরামির শিকার সে প্রতিদিন হয়। কিন্তু আজ, আকাশের কাছ থেকে পাওয়া সেই কয়েক মুহূর্তের সম্মান আর আন্তরিকতার পর, ইন্দ্রনীলের এই রূপটা তার কাছে অসহ্য ঠেকছিল।

তার আর সহ্য হলো না। সে খুব ধীরে, শান্তভাবে আর্টবুকটা বন্ধ করল। মলাট বন্ধের ‘ধপ’ শব্দটা ইন্দ্রনীলের কথার স্রোতে হারিয়ে গেলেও, আকাশ আর বর্ষার কানে সেটা যেন এক যুগের সমাপ্তির মতো শোনাল।

বর্ষা উঠে দাঁড়াল। তার চলাফেরায় কোনো তাড়াহুড়ো নেই, কিন্তু তার মেরুদণ্ডটা টানটান। “আমার মাথাটা ধরেছে। আমি শুতে যাচ্ছি,” তার গলাটা ছিল শীতল, আবেগহীন। সে একবারও ইন্দ্রনীলের দিকে তাকাল না। ঘরের দরজা পর্যন্ত হেঁটে যেতে যেতে তার শাড়ির আঁচলটা মেঝেতে সামান্য লুটোচ্ছিল। সে যেন এক পরাজিত সম্রাজ্ঞী, নিজের রাজ্য ছেড়ে নিঃশব্দে নির্বাসনে যাচ্ছে।

শোবার ঘরের দরজাটা প্রায় শব্দহীনভাবে বন্ধ হয়ে গেল।

ঘরে আবার নীরবতা নেমে এল, কিন্তু এবার এই নীরবতাটা অন্যরকম। এটা অন্তরঙ্গ নয়, অস্বস্তিকর। ইন্দ্রনীল অবশ্য তাতে বিন্দুমাত্র বিচলিত হলো না। বর্ষার চলে যাওয়াটা যেন তাকে আরও স্বাধীনতা দিল।

“মেয়েছেলেদের এই এক সমস্যা,” সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল। “একটু অন্য মেয়ের প্রশংসা শুনলেই মুখ হাঁড়ি করে বসে থাকবে। আরে বাবা, চোখের খিদে বলেও তো একটা কথা আছে, তাই না?”

আকাশ চুপ করে রইল। তার ইচ্ছে করছিল হুইস্কির গ্লাসটা ইন্দ্রনীলের মুখে ছুঁড়ে মারতে। যে নারীকে সে দেবীর মতো পূজা করে, তার সামনেই ইন্দ্রনীল কী অবলীলায় অন্য নারীর শরীর নিয়ে চর্চা করছে! বন্ধুর প্রতি তার আনুগত্য আর বর্ষার প্রতি তার ভালোবাসা—এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে সে পুড়ছিল। তার মনে হচ্ছিল, এই ভণ্ডামির শেষ হওয়া দরকার। আজ রাতেই।

বর্ষা চলে যেতেই ঘরের পরিবেশটা আরও ভারী হয়ে উঠল। ইন্দ্রনীল অবশ্য সেই ভারিক্কি মেজাজটাকে পাত্তা দিল না। বরং, সে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। সে উঠে গিয়ে দুজনের গ্লাসেই আবার স্কচ ঢালল, এবার পরিমাণটা একটু বেশিই।

“মেয়েছেলেদের নাটক!” গ্লাসটা আকাশের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে সে বলল। “যাক, আপদ গেছে। এবার আমরা শান্তিতে একটু কথা বলতে পারব।”

আকাশ চুপচাপ গ্লাসটা নিল। তার ভেতরে একটা তীব্র ঝড় চলছিল। ইন্দ্রনীলের প্রত্যেকটা কথা, প্রত্যেকটা ভঙ্গি তার অসহ্য লাগছিল।

ইন্দ্রনীল সোফায় হেলান দিয়ে বলল, “তোর জীবনটা দেখে আমার মাঝে মাঝে হিংসে হয়, আকাশ। কোনো ঝামেলা নেই। একা থাকিস, নিজের মতো কাজ করিস। আর আমার দেখ, কোটি কোটি টাকার ব্যবসা, সুন্দরী বউ… কিন্তু শান্তি নেই।”

কথাটা বলে সে নিজেই হেসে উঠল, যেন নিজের রসিকতায় নিজেই মুগ্ধ। “অবশ্য এই অশান্তিরও একটা আলাদা মজা আছে, বুঝলি? এই যে লুকিয়ে অন্য মেয়ের সাথে শোয়া, ধরা পড়ার ভয়… একটা থ্রিল আছে। আমার জীবনটাই একটা সেরা বাংলা সেক্স গল্পের মতো, যেখানে প্রতি মুহূর্তে নতুন টুইস্ট।”

নেশার ঘোরে তার জিভের জড়তা বাড়ছিল, আর তার সাথে বাড়ছিল তার নির্লজ্জ আস্ফালন। “বর্ষা… ও জানে, সবটা না জানলেও আন্দাজ করে। কিন্তু কী করবে? আমার খাঁচার পাখি ও। উড়তে চাইলেও পারবে না, কারণ ডানা দুটো আমার হাতে।”

এই কথাগুলো শুনে আকাশের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। সে গ্লাসের ঠান্ডা কাঁচটা হাতের মুঠোয় আরও জোরে চেপে ধরল। বর্ষাকে ‘খাঁচার পাখি’ বলাটা তার বুকে ছুরির মতো বিঁধল।

ইন্দ্রনীল তার দিকে ঝুঁকে এসে বলল, “আচ্ছা, সত্যি করে বল তো আকাশ, তোর জীবনে কি সত্যিই কেউ নেই? তুই কি বর্ষার মতোই বোরিং হয়ে গেলি নাকি? এত টাকা কামাচ্ছিস, হ্যান্ডসাম ছেলে… একটা মেয়েও জোটাতে পারলি না?”

ইন্দ্রনীলের এই বিদ্রূপ, বর্ষার সাথে তার তুলনা—এই দুটো একসাথে আকাশের ধৈর্যের শেষ বাঁধটা ভেঙে দিল। বছরের পর বছর ধরে যে আগুনটা সে বুকের মধ্যে চেপে রেখেছিল, আজ হুইস্কির নেশায় আর ইন্দ্রনীলের অহংকারের ইন্ধনে তা দাউদাউ করে জ্বলে উঠল।

অনেকক্ষণ ধরে একটা পিনপতন নীরবতা বিরাজ করল ঘরে। বাইরে বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কোনো আওয়াজ নেই। আকাশ তার গ্লাসের দিকে তাকিয়ে ছিল, তার চোখ দুটো লাল। ইন্দ্রনীল ভাবল, তার বন্ধু হয়তো লজ্জা পেয়েছে। সে হাসতে যাচ্ছিল।

কিন্তু তখনই আকাশ মুখ তুলল। তার দৃষ্টি স্থির, শান্ত, কিন্তু তার গভীরে এক ভয়ঙ্কর সংকল্প। তার গলাটা মাতাল, কিন্তু প্রত্যেকটা শব্দ স্পষ্ট এবং ধারালো।

সে ইন্দ্রনীলের চোখে চোখ রেখে বলল, “আমি বর্ষাকে চাই, ইন্দ্র।”

ঘরের বাতাস যেন জমে বরফ হয়ে গেল। ইন্দ্রনীলের মুখের হাসিটা সেখানেই স্থির হয়ে গেল।

আকাশ থামল না। সে একই স্বরে বলে চলল, “শুধু একদিনের জন্য…”

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে তার জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত সত্যিটা উচ্চারণ করল।

“…তোমার সামনে।”

আকাশের শেষ শব্দটা ঘরের মধ্যে প্রতিধ্বনিত হতে থাকল। ইন্দ্রনীলের হাত থেকে হুইস্কির গ্লাসটা প্রায় পড়েই যাচ্ছিল। তার মুখের পেশিগুলো জমে গেছে। কয়েক মুহূর্ত আগের সেই বিজয়ীর হাসি, সেই অহংকারী ভঙ্গি—সব উধাও। তার চোখে প্রথমে ফুটে উঠল তীব্র বিস্ময়, যেন সে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তারপর সেই বিস্ময়কে ছাপিয়ে উঠে এল গনগনে ক্রোধের এক লাল আভা, তার কপাল থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল সেই উত্তাপ। তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, তার বাড়িতে বসে, তারই স্ত্রীকে চাইছে, তাও আবার তার সামনে! এত বড় স্পর্ধা!

কিন্তু সেই ক্রোধের আগুনের নিচে, খুব গভীরে, আর একটা অনুভূতিও উঁকি দিল—এক অদ্ভুত, নিষিদ্ধ কৌতূহল। ইন্দ্রনীলের ভেতরের সেই পশুটা, যা নতুনত্ব আর চরম ক্ষমতার খেলায় মেতে থাকতে ভালোবাসে, সেটা যেন এই অভাবনীয় প্রস্তাবে এক নতুন রোমাঞ্চের গন্ধ পেল। তার অহংকারে যে তীব্র আঘাত লেগেছে, সেই ক্ষতের উপরেই যেন এক বিকৃত আনন্দের প্রলেপ পড়তে শুরু করল।

সে ফ্যালফ্যাল করে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল। তার ঠোঁট দুটো সামান্য ফাঁক হয়ে আছে, কিন্তু কোনো শব্দ বেরোচ্ছে না। ঘরের মধ্যে শুধু বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ আর দুটো পুরুষের ভারী নিশ্বাস। এই একটি বাক্য তাদের তিনজনের জীবনের মোড় চিরদিনের জন্য ঘুরিয়ে দিয়েছে। এরপর কী হবে, তা কারোরই জানা নেই।

কেমন লাগলো গল্পটি?

রেট দিতে ৫ স্টার নির্বাচন করুন!

সার্বিক ফলাফল 0 / ৫ । মোট ভোট 0

এখনো কেউ ভোট দেয়নি! প্রথম ভোটটি দিন !

যদি গল্পটি ভালো লেগে থাকে…

আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে অনুসরণ করুন!

দুঃখিত, গল্পটি আপনার ভালো লাগেনি!

আমাদের আরও উন্নত করতে সাহায্য করুন

দয়া করে লিখুন কীভাবে আমরা গল্পটি আরও ভালো করতে পারি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top