আমার আর্মি বাবা আর আমার সেই বাংলা চটি কাহিনী
সকালের প্রথম আলো যখন আমার চোখের পাতায় এসে পড়ল, আমার মনে হলো কেউ যেন আমার মাথার ভেতরে হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে। মদের প্রত্যেকটা ফোঁটা যেন আমার মস্তিষ্কের কোষে কোষে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। শরীরটা ভারী, মুখটা বিস্বাদ। কিন্তু এই শারীরিক যন্ত্রণার থেকেও হাজার গুণ বেশি ছিল আমার মনের যন্ত্রণা।
গত রাতের দৃশ্যগুলো ভাঙা কাঁচের টুকরোর মতো আমার স্মৃতিতে ফুটে উঠছিল। আমার টলতে টলতে বাড়ি ফেরা, বাবার কোলে ওঠা, আর তারপর… বিছানায় আমার সেই নির্লজ্জ, পাশবিক আচরণ। আমি আমার নিজের বাবাকে соблазнять করার চেষ্টা করেছি! আমি তার সামনে প্রায় নগ্ন হয়েছিলাম!
লজ্জায়, ঘৃণায়, অপমানে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছিল। আমি বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম। আমি কী করে বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়াব? কী বলব তাকে? তার চোখে আমি কী দেখব? ঘৃণা? বিতৃষ্ণা?
কিন্তু কান্নার শেষে, সেই অপমানের গভীরে, আরও একটা অনুভূতি লুকিয়ে ছিল। গত রাতের সেই প্রত্যাখ্যান। বাবার সেই যন্ত্রণাকাতর চোখ। তিনি আমাকে চান, কিন্তু তার নীতিবোধ, তার স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসা তাকে বাধা দিচ্ছে। এই চিন্তাটা আমাকে কষ্ট দেওয়ার পরিবর্তে, এক অদ্ভুত, বিকৃত শক্তি দিচ্ছিল। যুদ্ধটা এখনও শেষ হয়নি।
আমি জানি, আমাকে তার মুখোমুখি হতেই হবে। হয় এই দুর্গ ছেড়ে চিরদিনের জন্য পালিয়ে যেতে হবে, অথবা এই যুদ্ধের শেষ দেখে ছাড়তে হবে।
আমি বিছানা থেকে নামলাম। বাথরুমের আয়নায় নিজের দিকে তাকালাম। ফোলা চোখ, এলোমেলো চুল, বিধ্বস্ত চেহারা। আমি কোনওরকমে মুখে জল দিয়ে, একটা সাধারণ সালোয়ার-কামিজ পরে নিলাম। আমার শরীরটা কাঁপছিল। প্রত্যেকটা পদক্ষেপে মনে হচ্ছিল, আমি যেন কাঁচের ওপর দিয়ে হাঁটছি।
আমি আমার ঘর থেকে বেরোলাম। সারা বাড়িটা নিস্তব্ধ। আমি জানি, বাবা তার পড়ার ঘরে আছেন। প্রত্যেকদিন সকালে তিনি সেখানে বসেন।
আমি কাঁপতে কাঁপতে তার ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম। দরজাটা সামান্য ভেজানো। আমি সেই ফাঁক দিয়ে ভেতরে তাকালাম।
“আমার মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা, কিন্তু তার চেয়েও বেশি যন্ত্রণা আমার মনের ভেতরে। আমি কাঁপতে কাঁপতে বাবার ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াই। দরজাটা একটু ফাঁক হয়ে আছে। আমি সেই ফাঁক দিয়ে ভেতরে দেখি, বাবা তার প্রিয় आरामকেদারায় চুপচাপ বসে আছেন। তার দৃষ্টি সামনের দেওয়ালে টাঙানো আমার মৃত মায়ের ছবিটার দিকে। ওনার মুখে কোনো রাগ বা ঘৃণা নেই। আছে এক শান্ত, গভীর ভালোবাসা আর বিষণ্ণতার ছাপ। তিনি যেন তার স্ত্রীর সাথে মনে মনে কথা বলছেন। এই দৃশ্যটা দেখে আমার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। আমিই এই শান্ত মানুষটার জীবনে ঝড় তুলেছি। আমি আর পারলাম না। আমি খুব ধীরে, নিঃশব্দে দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকলাম।”
তিনি আমার পায়ের শব্দে চমকে উঠলেন। আমার দিকে ফিরলেন। তার চোখে এক মুহূর্তের জন্য গত রাতের সেই যন্ত্রণাটা ভেসে উঠল, কিন্তু পরমুহূর্তেই তা মিলিয়ে গেল। তিনি শুধু ক্লান্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।
আমি তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার মাথা নত। আমার চোখ মেঝের দিকে।
“বাবা,” আমি ফিসফিস করে বললাম। আমার গলাটা লজ্জায়, অপরাধবোধে বুজে আসছিল। “আমি… আমি খুব দুঃখিত… আমি জানি না, আমি কাল রাতে কী সব…”
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই, তিনি আমাকে থামিয়ে দিলেন।
সেলিম তার মেয়ের দিকে তাকালেন। তার চোখে কোনো রাগ নেই, আছে শুধু গভীর বোঝা এবং ক্লান্তি। তিনি জানেন, এই মেয়েটা একা। এই মেয়েটা কষ্ট পাচ্ছে। আর তার এই ভুলের পেছনে শুধু মদ নয়, আছে আরও গভীর কোনো কারণ। তিনি শান্ত গলায় বললেন, “ঠিক আছে, তিশা। আমি বুঝি।”
এই দুটো শব্দ। “আমি বুঝি।” এই দুটো শব্দই আমার জন্য যথেষ্ট ছিল। তিনি আমাকে ঘৃণা করেননি। তিনি আমাকে বোঝার চেষ্টা করছেন। আমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল।
“বোস,” তিনি তার পাশের ছোট টুলটার দিকে ইশারা করলেন।
তিশা তার পাশে বসল। তার চোখ দুটো তখন তার মায়ের ছবির দিকে। ছবিতে তার মা হাসছেন। একটা নির্মল, সুন্দর হাসি। সে তার মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে বলে, “তুমি মা-কে খুব ভালোবাসতে, তাই না?”
সেলিম এক সুন্দর, বিষণ্ণ হাসি হাসলেন। তার কঠিন মুখটা এক মুহূর্তে নরম হয়ে এল। “শব্দ দিয়ে যা বলা যায়, তার চেয়েও বেশি,” তিনি বললেন। তার দৃষ্টিও তখন তার স্ত্রীর ছবির দিকে। “ওর স্পর্শ, ওর হাসি… ওর শরীরের গন্ধ… সবকিছু এখনও আমার স্মৃতিতে জীবন্ত। ওর স্মৃতিটাই আমাকে এই পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বাঁচিয়ে রেখেছে। ও চলে যাওয়ার পর, এই বাড়িটা, এই জীবনটা—সবকিছু অর্থহীন হয়ে গিয়েছিল।”
ঘরের মধ্যে কিছুক্ষণ নীরবতা। শুধু আমাদের দুজনের নিঃশ্বases শব্দ।
কিছুক্ষণ নীরবতার পর, সেলিম তিশার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, “তুই কি খুব একা, তিশা? আমি তোর চোখে দেখতে পাই।”
এই একটি প্রশ্নেই তিশার সমস্ত প্রতিরোধ ভেঙে গেল। তার এতদিনের জমানো কষ্ট, তার একাকীত্ব, তার অতৃপ্তি—সবকিছু কান্নার രൂപে বেরিয়ে এল। সে শিশুর মতো ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল।
“খুব একা, বাবা। খুব একা,” সে কাঁদতে কাঁদতে বলল। “রফিকের অনুপস্থিতি আমাকে ভেতর থেকে শেষ করে দিচ্ছে। এই বিশাল বাড়িটা একটা কবরের মতো লাগে। দেওয়ালগুলো আমাকে গিলতে আসে। আমি হাসতে ভুলে গেছি, বাঁচতে ভুলে গেছি। আমি জানি, আমি কাল রাতে যা করেছি, তা অন্যায়। কিন্তু আমি… আমি আর পারছিলাম না, বাবা…”
সে তার মুখটা দুহাতে ঢেকে ফেলল। তার কান্নার শব্দে সেই শান্ত, গোছানো ঘরটার বাতাস ভারী হয়ে উঠল।
সেলিম তার মেয়ের এই ভাঙা, অসহায় রূপটা আর দেখতে পারলেন না। তার ভেতরের কর্নেলটা, তার ভেতরের বাবাটা, তার ভেতরের পুরুষটা—সবকিছু একাকার হয়ে গেল। তিনি তার মেয়ের কষ্টটাকে নিজের কষ্টের সাথে মেলাতে পারছিলেন। তিনিও তো একা। এই বিশাল দুর্গে তিনিও তো একজন একাকী রাজা।
তিনি তার হাতটা বাড়ালেন। তারপর, খুব আলতো করে, তিনি তার মেয়ের হাতটি নিজের হাতের মধ্যে তুলে নিলেন।
তার স্পর্শে ছিল বাবার স্নেহ, যা তিশা বহু বছর পর অনুভব করল। কিন্তু তার চেয়েও বেশি কিছু ছিল। ছিল একজন পুরুষের উষ্ণতা, নির্ভরতা এবং গভীর বোঝাপড়া।
তিনি শান্তভাবে বললেন, “তুই একা নোস, তিশা। আমি আছি তোর জন্য।”
“সেই মুহূর্তে, সেই একটি স্পর্শে, সেই একটি কথায়, আমার ভেতরের সবকিছু বদলে গেল। আমার সমস্ত দ্বিধা, সমস্ত লজ্জা, সমস্ত অপরাধবোধ, সমস্ত কামনা, সমস্ত আকর্ষণ—সবকিছু মিলেমিশে এক নতুন, গভীর, পবিত্র অনুভূতিতে পরিণত হলো। আমি তার হাতের দিকে তাকালাম। একটা রুক্ষ, শক্তিশালী হাত, যা আমার নরম, কাঁপতে থাকা হাতটাকে পরম নির্ভরতায় ধরে আছে। আমি তার চোখের দিকে তাকালাম। সেই চোখে আমি আর আমার বাবাকে দেখলাম না। আমি দেখলাম একজন পুরুষকে। একজন সঙ্গীকে। যে আমাকে বোঝে, যে আমার একাকীত্বকে অনুভব করে, যে আমাকে আশ্রয় দিতে চায়।”
“আমি বুঝতে পারলাম, আমি আমার বাবার প্রেমে পড়ে গেছি। শুধু বাবা হিসেবে নয়, একজন পুরুষ হিসেবে। এই ভালোবাসাটা শারীরিক আকর্ষণের ঊর্ধ্বে। এটা দুটো একাকী, ভাঙা আত্মার একে অপরকে খুঁজে পাওয়ার ভালোবাসা।”
তারা দুজনে হাতে হাত রেখে চুপচাপ বসে থাকে। ঘরের নীরবতা এখন আর অস্বস্তিকর নয়, তা গভীর বোঝাপড়ায় পূর্ণ। নিষিদ্ধ কথাটি বলা হয়ে গেছে, এবং এক অদ্ভুত উপায়ে তা ক্ষমাও করা হয়েছে।
তাদের বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা এক নতুন, অন্তরঙ্গ ভালোবাসার সম্পর্কে রূপান্তরিত হয়েছে।
এখন প্রশ্নটা আর ‘যদি’ নয়, এখন প্রশ্নটা হলো ‘কখন’।
তাদের দুজনের চোখেই সেই অব্যক্ত প্রশ্নের উত্তর লেখা আছে। যুদ্ধটা শেষ হয়নি। বরং, এক নতুন, আরও গভীর, আরও জটিল যুদ্ধ সবে শুরু হলো।
